আনন্দধারা। Anandadhara (West Bengal State Rural Livelihood Mission (WBSRLM): কি এবং কেন?
ভারত সরকারের গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (MoRD)-এর উদ্যোগে চালু হয়েছে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন (NRLM)। পশ্চিমবঙ্গে এই মিশনটি আনন্দধারা নামে পরিচিত। এটি ২০১২ সালের ১৭ই মে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শুরু হয়।
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো গ্রামীণ দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলা এবং সংঘবদ্ধ ও সমবায় প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করা।
এই লক্ষ্যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৮৬০ এর অধীনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশন (WBSRLM) নামে একটি সংস্থা গঠন করেছে যার মধ্যে এই প্রকল্পটি পরিচালিত হবে।
আনন্দধারা প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য এবং তার বাস্তবায়ন
- প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন মহিলা সদস্যকে স্বয়ং সহায়ক গোষ্ঠীতে অর্থাৎ SHG দলে যুক্ত হতে হবে।
- SC/ST, সংখ্যালঘু, একা নারী, নারী পরিচালিত পরিবার, প্রতিবন্ধী, ভূমিহীন, শ্রমিক, এবং বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়কে বিশেষত এই প্রকল্পে যুক্ত করা হচ্ছে।
- নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দরিদ্রদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে।
- জীবিকা পরিচালনা, ঋণ ব্যবস্থাপনা, এবং সংগঠন পরিচালনা প্রভৃতিতে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে।
- কমিউনিটি রিসোর্স পারসন (CRP) এর মাধ্যমে, জেলা ও রাজ্য স্তরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
- ব্যাংক লিঙ্কেজের জন্য ব্যাংক মিত্র গঠন করা হয়েছে। ‘ এবং কমিউনিটি সেবাদাতাদের সহায়তা।
- ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- কৃষি, পশুপালন এবং অন্যান্য অ-কৃষি জীবিকার মাধ্যমে দরিদ্রদের আয় ৮০-৮৫ শতাংশ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
- মহিলা কৃষক সশক্তিকরণ প্রকল্প (MKSP) এর মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা ও কৃষি ব্যবস্থার উন্নতি করা হচ্ছে।
- সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে RSETI এর মধ্যে বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
- গ্রামীণ হাট (পশ্চিমবঙ্গে কর্মতীর্থ নামে পরিচিত) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উৎপাদক গোষ্ঠীগুলিকে বাজারের সাথে যুক্ত করা।
আনন্দধারা মিশন (পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশন – WBSRLM)
সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)
১. আনন্দধারা প্রকল্প কী?
আনন্দধারা প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন (NRLM) এর আওতায় পরিচালিত একটি উদ্যোগ, যার মাধ্যমে SHG গঠন এবং এর মাধ্যমে করে গ্রামের মানুষের সার্বিক উন্নতি করা হয়।
২. আনন্দধারা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো:
- দরিদ্র পরিবারগুলোকে সংগঠিত করে তাদের আয় বাড়ানো।
- নারীদের ক্ষমতায়ন।
- জীবিকা ব্যবস্থা তৈরি।
- ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ বাড়ানো।
- দক্ষতা বৃদ্ধি করা ও অন্যান্য।
৩. আনন্দধারা প্রকল্পে কে অংশগ্রহণ করতে পারে?
উত্তর: আনন্দধারা প্রকল্পে অংশগ্রহণের যোগ্যতা:
- দরিদ্র পরিবার।
- বিশেষত SC/ST, সংখ্যালঘু, একক নারী, প্রতিবন্ধী, ভূমিহীন শ্রমিক।
- প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন মহিলা সদস্যকে SHG সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে হবে।
৪. SHG বা Self Help Group কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর:
- প্রতিটি SHG সাধারণত ১০-২০ জন নারী সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।
- SHG গঠনের পরে তাদের প্রশিক্ষণ, ঋণ সুবিধা, যোগাযোগ স্কিল প্রভৃতি শেখানো হয়।
৫. আনন্দধারা প্রকল্পের মাধ্যমে কী কি সুবিধা পাওয়া যায়? ধরনের সহায়তা পাওয়া যায়?
উত্তর:
আনন্দধারা প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পাওয়া যায়।
- কম সুদে ঋণ প্রাপ্তি
- দক্ষতা উন্নয়নের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ।
- জীবন, স্বাস্থ্য এবং সম্পদের জন্য মাইক্রো-বিমা।
৬. ‘কর্ম তীর্থ’ কী?
উত্তর: কর্ম তীর্থ হল একটি গ্রামীণ হাট, যেখানে SHG এর সদস্যরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারজাত করে।
৭. কীভাবে আনন্দধারা প্রকল্পে যুক্ত হওয়া যাবে?
উত্তর:
- গ্রামে SGH হল বানাতে হবে।
- স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লক উন্নয়ন অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
- ব্লক বা জেলা স্তরের আনন্দধারা মিশন অফিস থেকেও তথ্য ও সহায়তা পাওয়া যাবে।
৮. এই প্রকল্পে কিভাবে আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায়?
উত্তর:
- SHG দলগুলিকে রিভলভিং ফান্ড (RF) এবং কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (CIF) দেওয়া হয়।
- SGH গ্রুপের মাধ্যমে কম সুদে ঋণ দেওয়া হয়।
- নারীদের জন্য লনের সুদে ছাড় দেওয়া হয়।।
৯. আনন্দধারা প্রকল্পে কি শুধুমাত্র মহিলারাই যুক্ত হতে পারবে? অন্তর্ভুক্ত হতে পারে?
উত্তর: প্রকল্পের মূল লক্ষ্য মহিলাদের মান উন্নত করা। তাই প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন মহিলা সদস্যকে SHG এর সঙ্গে যুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে কিছে ক্ষেত্রে পুরুষরাও অংশ নিচ্ছে।
১০. আনন্দধারা প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য কোথায় পাওয়া যাবে?
উত্তর:আনন্দধারা প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে নিম্নলিখিত অফিসে যোগাযোগ করুন।
- স্থানীয় ব্লক
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে।
- স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত বা SHG দলের নেতাদের কাছ থেকে।
source: