Geetanjali & Amar Thikana Scheme (গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা) : সকলের মাথার উপরে ছাদ – দরিদ্রদের জন্য সরকারি উদ্যোগ

|

আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য বিনামূল্যে বাসস্থান দেওয়ার লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের আবাসন বিভাগ বাড়ি নির্মাণের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানত শহুরে এলাকায় এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গীতাঞ্জলি’ আর গ্রামীণ এলাকায় ‘আমার ঠিকানা’।

গ্রামীণ এলাকায় প্রকল্পটি ৬টি বিভাগ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এই বিভাগগুলো হলো:

  • সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ
  • তপসিলি জাতি কল্যাণ বিভাগ
  • মৎস্য বিভাগ
  • বন বিভাগ
  • সুন্দরবন বিষয়ক বিভাগ
  • পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক বিভাগ

Contents

গীতাঞ্জলি এবং আমার ঠিকানা প্রকল্পর মূল উদ্দেশ্য:

  1. আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করা।
  2. বাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে নির্মাণশিল্পে কর্মসংস্থান তৈরী করা।

গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের খরচ

গ্রামীণ এলাকায় নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য খরচের পরিমাণ মাটির রকম ও জলবায়ুর উপর নির্ভর করে:

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের ক্ষেত্রে:

  • সমতলের গ্রামীণ এলাকায়: ₹১.৬৭ লক্ষ টাকা।
  • সুন্দরবন এলাকায়: ₹১.৯৪ লক্ষ টাকা।
  • দার্জিলিং জেলার পাহাড়ি এলাকায়: ₹২.৫১ লক্ষ টাকা।
  • জলপাইগুড়ি জেলার বনগ্রাম এলাকায়: ₹৩.০০ লক্ষ টাকা।

অন্যদিকে, পুরসভা নয় এমন আধা-শহর এলাকায়:

  • উপভোক্তার জমিতে একতলা বাড়ি: ₹১.৬৭ লক্ষ টাকা।
  • সরকার বা সরকারি সংস্থার জমিতে বহুতল বাড়ি: ₹৩.৩০ লক্ষ টাকা।

আমার ঠিকানা’ প্রকল্পের ক্ষেত্রে:

  • সমতলে: ₹৭০,০০০ টাকা।
  • পাহাড়ি, কঠিন ও উপকূলীয় এলাকায়: ₹৭৫,০০০ টাকা।

গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পে: টাকা দেওয়ার পদ্ধতি

প্রথমে অনুমোদিত অর্থের অর্ধেক দেওয়া হয়। প্রাথমিক অর্থের ব্যবহার ও অগ্রগতির রিপোর্ট পাওয়ার পরে বাকি অর্থ বরাদ্দ করা হয়।

সমস্যা ও সমাধান

প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিচালন এবং নজরদারির সমস্যা দেখা দেয় দিয়ে এই সমস্যা সমাধানে ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে, ‘আমার ঠিকানা’ এবং ‘গীতাঞ্জলি’ প্রকল্পেকে এক করে দেওয়া হয়। জেলা শাসকদের তত্ত্বাবধানে এখন শুধুমাত্র ‘গীতাঞ্জলি’ নামে একটি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।

গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পেআবেদন করতে পারবেন?

আয়ের শর্ত:

  1. যাঁরা গৃহহীন কিন্তু নিজের নামে জমির আছে এবং মাসিক আয় ₹6000 বা তার কম।
  2. যাঁরা বন্যা বা নদীর ভাঙনের ফলে গৃহহীন হয়ে গেছে।
  3. বন্যা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
  4. অন্য প্রকল্পের কারণে যাঁরা গৃহহীন হয়েছেন (পুনর্বাসনের জন্য)।
  • মাসিক আয় ₹6000 বা তার কম হতে হবে।
  • BPL তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবেন।

    গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পে আবেদন পদ্ধতি

    অফলাইন প্রক্রিয়া:
    জেলা বা ব্লক স্তরে এই প্রকল্পের কাজ পরিচালনা করেন জেলা শাসক, উপ-বিভাগীয় শাসক (SDO) ও ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (BDO)। আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

    প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

    1. পরিচয়পত্র (আধার কার্ড, ভোটার আইডি, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স)।
    2. ঠিকানার প্রমাণপত্র।
    3. আয়ের শংসাপত্র।
    4. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য।
    5. আবেদনকারীর ছবি।
    6. জন্মের প্রমাণপত্র।

    গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্প নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

    প্রশ্ন: গীতাঞ্জলি প্রকল্প কী?

    উত্তর: গীতাঞ্জলি প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি আবাসন প্রকল্প, যা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এবং গৃহহীন মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে।

    প্রশ্ন: আমার ঠিকানা প্রকল্প কী?

    উত্তর: আমার ঠিকানা প্রকল্পটি পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দপ্তর দ্বারা পরিচালিত একটি আবাসন প্রকল্প। এই প্রকল্পটি বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় গৃহহীন পরিবারদের জন্য বাড়ি নির্মাণে সহায়তা করে।

    প্রশ্ন: গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য কে আবেদন করতে পারেন?

    উত্তর:

    • যাঁদের মাসিক আয় ₹৬,০০০ বা তার কম।
    • যাঁরা গৃহহীন কিন্তু নিজের নামে জমি আছে।
    • যাঁরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বন্যা, নদী ভাঙন ইত্যাদি) বা সরকারি প্রকল্পের কারণে গৃহহীন হয়েছেন।
    • BPL তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

    প্রশ্ন: আমার ঠিকানা প্রকল্পের জন্য কারা যোগ্য?

    উত্তর:

    • গৃহহীন পরিবার।
    • গ্রামের দরিদ্র মানুষ।
    • নদীভাঙন, বন্যা, বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।

    প্রশ্ন: গৃহ নির্মাণের জন্য জমির শর্ত কী?

    উত্তর: আবেদনকারীর নিজের নামে জমি থাকতে হবে। জমি কোনো ঝামেলা বা বিতর্কমুক্ত হতে হবে। শহুরে এলাকায়, জেলা প্রশাসন বা মিউনিসিপ্যালিটির দেওয়া জমিতে গোষ্ঠী আবাসন তৈরি হতে পারে।

    প্রশ্ন: কীভাবে আবেদন করা যাবে?

    উত্তর:

    • আবেদন প্রক্রিয়া মূলত অফলাইনে
    • সংশ্লিষ্ট ব্লক উন্নয়ন অফিস (BDO), উপ-বিভাগীয় অফিস (SDO), বা জেলা প্রশাসকের অফিসে যোগাযোগ করে আবেদন করতে হবে।

    প্রশ্ন: প্রকল্পের প্রধান সুবিধাগুলি কী কী?

    উত্তর:

    • গৃহহীন পরিবাররা বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে বাড়ি পায়।
    • বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে গৃহহীন হওয়া মানুষদের পুনর্বাসন।
    • গ্রামীণ ও শহরের দরিদ্র মানুষের জন্য জীবনের মানোন্নয়ন।
    • গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে নির্মাণকর্মীদের কর্মসংস্থান।

    প্রশ্ন: প্রকল্পটি কোথায় প্রযোজ্য?

    উত্তর:
    গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত গ্রামীণ ও শহরতলি এলাকায় কার্যকর।

    প্রশ্ন: আবেদন করতে কী কী নথি লাগবে?

    উত্তর:

    • পরিচয়পত্র (আধার কার্ড/ভোটার আইডি)।
    • ঠিকানার প্রমাণপত্র।
    • আয়ের শংসাপত্র।
    • জমির কাগজপত্র।
    • আবেদনকারীর ছবি।
    • ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ।

    প্রশ্ন: গীতাঞ্জলি ও আমার ঠিকানা প্রকল্পের মধ্যে পার্থক্য কী?

    উত্তর:

    • গীতাঞ্জলি প্রকল্প: গ্রামীণ ও শহুরে গৃহহীনদের জন্য। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি এর জন্য।
    • আমার ঠিকানা প্রকল্প: গ্রামীণ এলাকার গৃহহীন পরিবারদের জন্য কম খরচে আবাসন নির্মাণ।

    অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: wbhousing.gov.in
    source:

    1. https://www.wbhousing.gov.in/files/GITANJALI%20HOUSING%20SCHEME.pdf
    2. https://wbhousing.gov.in/pages/display/7-scheme
    3. https://wb.gov.in/government-schemes-details-geetanjali.aspx#

    Similar Posts

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *