তরুনের স্বপ্ন প্রকল্প: ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল কেনার জন্য ১০,০০০ টাকা দিচ্ছে সরকার (Taruner Swapna Scheme in West Bengal)

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২২ সালে “তরুনের স্বপ্ন ” প্রকল্পটি চালু করেছে, এটি একটি শিক্ষামূলক সংস্কারমূলক প্রকল্প। এই স্কিমের মূল উদ্দেশ্য হল, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা। এই স্কিমের আওতায়, সরকার শিক্ষার্থীদের এককালীন ১০,০০০/- টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে , যাতে তারা ট্যাবলেট/ স্মার্টফোন বা পিসি কিনতে পারে।
প্রাথমিকভাবে, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি স্কুল বা মাদ্রাসায় দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা এই ১০,০০০/- টাকা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য ছিল। তবে এখন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও এই স্কিমের মাধ্যমে ১০,০০০/- টাকা পাওয়ার যোগ্য যাতে করে তারা ট্যাবলেট/ স্মার্টফোন বা পিসি কিনতে পারে।
তারুণ্যের স্বপ্ন প্রকল্প: সারমর্ম
স্কিমের নাম | পশ্চিমবঙ্গ তারুণ্যের স্বপ্ন স্কিম |
---|---|
শুরু করেছে | পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
কোন বছর শুরু হয় | ২০২২ |
উদ্দেশ্য | শিক্ষার্থীদের ট্যাবলেট/ স্মার্টফোন বা পিসি কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা |
আবেদন মোড | অনলাইন/অফলাইন |
যোগ্য বিদ্দ্যাথী | পশ্চিমবঙ্গের ১১ তম ও ১২ তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা |
আর্থিক সহায়তা | ১০,০০০/- টাকা |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
আধিকারিক ওয়েবসাইট | https://banglarshiksha.gov.in/ |
যোগ্যতা (Eligibility Criteria for West Bengal Taruner Swapna Scheme)
আপনারা অনেকেই পশ্চিমবঙ্গ তরুনের স্বপ্ন স্কিম -এর জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক। তবে আবেদন করার আগে, আপনাকে এই স্কিমের জন্য, কিছু যোগ্যতা পূরণ করতে হবে । নিচে আমরা স্কিমের জন্য প্রযোজ্য সকল যোগ্যতা শর্তগুলি আলোচনা করছি:
- আবেদনকারীকে শিক্ষার্থী হতে হবে।
- এই স্কিমের জন্য আবেদনকারী শুধুমাত্র একাদশ (১১) এবং দ্বাদশ (১২) শ্রেণির শিক্ষার্থী হতে হবে
- শিক্ষার্থীর পরিবারকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে অথবা পূর্বে তার পরিবারকে দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ এই রাজ্যে স্থায়ী বাসিন্দা থাকতে হবে।
- আবেদনকারী শিক্ষার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার বেশি হলে যোগ্য নয়।
- আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- শিক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গের নিম্নলিখিত স্কুল বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত কোনো স্কুলে পাঠরত হতে হবে:
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি স্কুল
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে পরিচালিত স্কুল
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বীকৃত মাদ্রাসা
তরুনের স্বপ্ন প্রকল্পের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গ তরুনের স্বপ্ন স্কিমের আওতায় আর্থিক সহায়তা পেতে শিক্ষার্থীদের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
- বিদ্যালয়ের মাধ্যমেই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে। শিক্ষার্থীকে প্রথমে তার নিজস্ব বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
- বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীকে Student DCF ফর্ম পূরণ করতে হবে। ফর্মটি শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই প্রদান করা হবে।
- ফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ:
শিক্ষার্থীকে ফর্মে নিম্নলিখিত তথ্য প্রদান করতে হবে:- নাম
- বাবার নাম
- স্কুলের নাম
- বয়স
- আধার কার্ডের নম্বর
- রক্তের গ্রুপ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ
- অভিভাবকদের নাম
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য
- ঠিকানা
- এক কপি ছবি
- ঠিকানার প্রমাণ
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য
- ফর্মটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
- বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ Banglar Shiksha Portal-এ ১১ তম ও ১২ তম শ্রেণির সকল যোগ্য শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইনে আপলোড করবেন।
- সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রাপ্ত তরুনের স্বপ্ন স্কিম আবেদনপত্র যাচাই ও বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
- যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
- নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০,০০০/- টাকা সরাসরি স্থানান্তর করা হবে, যা স্মার্টফোন/পিসি/ট্যাবলেট কেনার জন্য ব্যবহৃত হবে।
- স্মার্টফোন/ট্যাবলেট বা পিসি কেনার পর শিক্ষার্থীকে কেনার বিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
তরুনের স্বপ্ন প্রকল্প – FAQ (সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন )
১. পশ্চিমবঙ্গ তরুনের স্বপ্ন প্রকল্প কী?
তরুনের স্বপ্ন স্কিম হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ২০২২ সালে চালু করা হয়। এই স্কিমের আওতায়, নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ১০,০০০/- টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা স্মার্টফোন, ট্যাবলেট অথবা পিসি কিনে প্রযুক্তির মাধ্যমে পড়াশোনা করতে পারে।
২. কারা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবে ?
আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু যোগ্যতার শর্ত রয়েছে:
- শিক্ষার্থীকে ১১ তম বা ১২ তম শ্রেণির ছাত্র বা ছাত্রী হতে হবে।
- শিক্ষার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয় ২,০০,০০০/- টাকার বেশি হলে হবে না।
- শিক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে বা তার পরিবারকে পূর্বে ১০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে বাসরত হতে হবে।
- শিক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বীকৃত স্কুল বা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে হবে (সরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত, অধীনে পরিচালিত বা স্বীকৃত মাদ্রাসা)।
- শিক্ষার্থীকে শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. কিভাবে আমি এই স্কিমের জন্য আবেদন করব?
- আবেদন করতে হলে শিক্ষার্থীকে তার নিজস্ব বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
- বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীকে Student DCF ফর্ম প্রদান করবে, যেটি পূরণ করতে হবে।
৪. Student DCF ফর্মে কী কী তথ্য পূরণ করতে হবে?
শিক্ষার্থীকে ফর্মে নিম্নলিখিত তথ্য প্রদান করতে হবে:
- নাম
- বাবার নাম
- স্কুলের নাম
- বয়স
- আধার কার্ড নম্বর
- রক্তের গ্রুপ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ
- অভিভাবকের নাম
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য
- ঠিকানা
- এক কপি ছবি
৫. কোন কোন ডকুমেন্ট ফর্মের সঙ্গে জমা দিতে হবে?
শিক্ষার্থীকে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলি জমা দিতে হবে:
- এক কপি ছবি
- ঠিকানার প্রমাণ (যেমন আধার কার্ড, ইউটিলিটি বিল)
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য (ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য)
৬. ফর্ম জমা দেওয়ার পর কী হবে?
- ফর্মটি জমা দেওয়ার পর, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা Banglar Shiksha Portal-এ ১১ তম ও ১২ তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইনে আপলোড করবেন।
- এরপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদনপত্রের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
৭. আর্থিক সহায়তা কিভাবে প্রদান করা হবে?
- যাচাইয়ের পর, নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট স্কুলে পাঠানো হবে।
- তারপর নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০,০০০/- টাকা সরাসরি স্থানান্তর করা হবে।
৮. এই আর্থিক সহায়তা দিয়ে আমি কী কী ডিভাইস কিনতে পারব?
শিক্ষার্থীরা এই আর্থিক সহায়তা দিয়ে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা পিসি কিনতে পারবেন, যা তাদের পড়াশোনায় সাহায্য করবে।
৯. কী করার পর আমি ডিভাইস কেনার বিল জমা দেব?
- ডিভাইস কেনার পর, শিক্ষার্থীকে কেনা বিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
১০. আমি যদি আবেদন প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা মুখোমুখি হই, তাহলে কী করব?
- আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কোনো সমস্যা বা প্রশ্ন থাকলে, শিক্ষার্থীদের তাদের বিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।
source: https://banglarshiksha.gov.in/